বর্তমানে দেশে সাপের দংশনের ঘটনা দেখা দেয় যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সার্বজনীন স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশে ৬১০টি সাপের দংশনের তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন রাসেলস ভাইপার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর, বলেন, এমআইএস এর তথ্যানুসারে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত এই ঘটনার রেকর্ড হয়েছে। তাঁর অনুসারে, রাজশাহীতে সাপের দংশনে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্যানুসারে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৪১৬ জন রোগী সাপের দংশনে ভর্তি হয়েছে, যার মধ্যে ৭৩টি বিষধর সাপ এবং ১৮টি চন্দ্রবোড়া সাপ। এ দংশনে আক্রান্ত হয়েছে মোট ১১ জন রোগী, যেখানে চন্দ্রবোড়া সাপের দংশনের কারণে পাঁচজন মারা গিয়েছেন।

এছাড়াও, ডা. রাসেল ভাইপার বলেন, বাংলাদেশে ২০২২ সালের জাতীয় জরিপে অনুযায়ী চার লাখের অধিক মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। সাপের বিষয়ে অপর্যাপ্ত তথ্য অস্তিত্ব থাকলেও, বিশেষত ‘বিষধর’ সাপ গোখরা, ক্রেইট, চন্দ্রবোড়া এবং সবুজ সাপ অন্যতম হিসেবে দেখা যায়। কিছু কিছু সামুদ্রিক সাপের দংশনের তথ্য আরও বিদ্যমান।

চন্দ্রবোড়ায় সাপের অস্তিত্ব এবং এর দংশনের ইতিহাস ১৯২০ সালেই স্বীকৃত আছে। ২০১৩ সালে রামেক হাসপাতালে চন্দ্রবোড়া অথবা উলুবোড়া সাপের দংশনের প্রথম রিপোর্ট হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে, সাথেই প্রাথমিকভাবে রাজশাহী ও বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রভাব বেশি দেখা গেছে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে চন্দ্রবোড়ার বিস্তৃতি ২৭টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। ‘বিষধর’ সাপের দংশনের চিকিৎসার জন্য এন্টিভেনম ব্যবহার করা হয়। এ কারণে সাপের দংশনের বিরুদ্ধে আতঙ্ক নয়, বরং প্রয়োজন সচেতনতা।